Wednesday, February 20, 2019

চন্দন ঘোষ-এর অণুগল্প





একটি হত্যাকাণ্ড

একটা কাফেতে ঢুকেই সে এলোপাথাড়ি গুলি চালালো।  তারপর সে প্রথমে হা হা করে হেসে উঠল এবং পরেই হু হু করে কেঁদে ফেল্ল। কারণ তার মা ছিল একজন বেশ্যা এবং কম বয়সে তার পেছন মেরেছিল কয়েকটা মুশকো মতো লোক। এবং সে এদের সবার, হ্যাঁ সবার, যারা তাকে টিটকিরি দিত বা যে সব দাড়িওলা কুকুর তাদের জিভ ওর মুখে ঢুকিয়ে দিত, তাদের নিপাত চেয়েছিল। তাদের সবার রক্ত দলা দলা করে হাতে মাখতে চেয়েছিল।

কিন্তু এখন বন্দুক নামিয়েই সে দেখতে পেল মড়ার স্তুপের মধ্য থেকে এক-পা-ছেঁড়া  এক রক্তাক্ত কুকুরছানা একটা জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতো লেংচে লেংচে  তারই দিকে এগিয়ে আসছে।


গল্প ও তার গরু

তারপর একদিন একটা গল্প, শুরু হবে, ঠিক করল। শুরুতেই সে গড়াতে গড়াতে গেল নায়কের গ্রামের বাড়ি। নায়ক তখন সবে গাড়ু নিয়ে বড়ো বাইরেতে বসেছে। সে কাজুবনের আড়ালে ইয়ে করা ছেড়ে কিছুতেই বেরোতে রাজি হল না। 

তো বেচারা গল্প আর কী করে। সে গেল নায়িকার বাড়ি। গিয়ে দেখে নায়িকার সদ্য সদ্য বিয়ে হয়ে গেছে। সে এখন পাঁচিলে ঘুঁটে দিচ্ছে। সে গল্পের চক্করে পড়তে চাইল না। এই অবস্থায় আবার প্রেম! আবার তাই নিয়ে যত ইছিৎবিছিৎ! সোয়ামী কী বলবে? পাড়ার লোক কী বলবে?

গল্পের তো হালতই খারাপ। তাহলে সে এখন শুরু হবে কী করে! অথচ এই বইমেলাতেই যে তার বেরোনোর কথা ছিল। কতো সুন্দরীদের হাতে ওঠার কথা তার। কত উত্তরীয়, মালা, কতো মেডেল পাওয়ার কথা তার। সেসব যখন আর হলই না, তবে এ জীবন আর রেখে কী হবে! 

গল্প এখন সাতভাই কালীতলার ব্রীজে উঠেছে, ইছামতীতে ঝাঁপ দেবে বলে। দ্যাখে পাশের গাছে তার গরুও উঠেছে। ভালোই হল। যাক, এযাত্রা আর তাকে ঝাঁপ দিতে হবে না। এবার যা করবার তার গরুই করে দেবে।


No comments:

Post a Comment

সম্পাদকীয়-র পরিবর্তে

"একটা কথা আমি বলি। আমরা অনেকগুলো জিনিস খবরের কাগজে দেখি। সারফেসে দেখি, তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যাই। আমাদের আর কিন্তু প্...

পাঠকের পছন্দ